কোরবানিতে স্বাস্থ্য সচেতনতা
2024-06-14 | 396 Views
কড়া নাড়ছে মুসলমানদের বছরের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদ আসে খুশির ঝলক হয়ে। ঈদুল আজহাতে প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে পশু কোরবানি করা ওয়াজিব। খুশির ঈদ যাতে আমাদের একটু অসচেতনতায় পণ্ড না হয় সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে।
আমাদের সচেতনতার অভাবে, সুন্দর পরিবেশ ও আনন্দঘন ঈদের দিন পশুর রক্ত ও বর্জ্য পদার্থ দিয়ে অনেকেই রাস্তাঘাট, বাসা বাড়ির চারপাশ একেবারে দুর্গন্ধযুক্ত করে ফেলি। একটু সচেতন হলে এবং উদ্যোগ নিলে আমরা পরিবেশ দূষণরোধ এবং রোগ-জীবাণুর বিস্তার এড়াতে পারি। এ ছাড়া এবার যেহেতু কোরবানির ঈদ করোনা মহামারীকালীন হচ্ছে, তাই নিরাপদে কোরবানির কাজ সম্পন্ন করতে নিতে হবে বিশেষ স্বাস্থ্য সতর্কতা। যেমন-
-
কোরবানির কাজটি সম্পূর্ণ করতে অবশ্যই পরিষ্কার তিন স্তরের কাপড়ের মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ও শুরুর আগে-পরে সাবান পানি বা জীবণুনাশক লিকুইড ব্যবহার করতে হবে। তাহলে সংক্রমণের আশঙ্কা একদম কমে যাবে।
-
কোরবানি শেষে কুসুম গরম পানি ও সাবান দিয়ে ভালো করে গোসল করুন ও গায়ের পোশাক পরিবর্তন করুন।
-
নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির পশু জবাই করতে হবে এবং পর্যাপ্ত পানি ঢেলে রক্ত পরিষ্কার করা প্রয়োজন। পশু কোরবানির রক্ত গর্তে মাটিচাপা দিয়ে পরিবেশ স্বাস্থ্যকর রাখা যায়। এ ছাড়া যে জায়গায় মাংস কাটা হবে, সেখানে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দিয়ে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
-
প্রতিবারের মতো কোরবানির বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে। কোরবানিকৃত পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণের জন্য সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সহায়তা করতে হবে। সিটি কর্পোরেশনকে এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচ্ছন্নতার দিকে একটু বিশেষভাবে তড়িৎ-তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের দিকে নজর রাখতে হবে। পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে, ঈদুল আজহাকে আনন্দময় করতে এবং নিজের পাড়া-মহল্লাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে আসুন সবাই যে যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসি।
ঈদে মাংস সংরক্ষণে ভুল ধারণার কারণে অনেক সময় টিনিয়া সোলিয়াম নামক পরজীবির সংক্রমণ ঘটতে পারে, ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দেয়। তাই সঠিকভাবে কোরবানির মাংস সংরক্ষণ করা একটি জরুরি বিষয়। এছাড়া অর্ধসিদ্ধ মাংস খাওয়া কোনোভাবেই ঠিক নয়। কোরবানির মাংসে জীবাণুর সংক্রমণ হলে মারাত্মক অ্যান্টারাইটিস হতে পারে। এ রোগ পেটের এক ধরনের সংক্রামক, যা খুবই ভয়াবহ। তাই সম্পূর্ণ সুস্থ ব্যক্তি দ্বারা মাংস কাটা, প্যাকেট করা এবং ফ্রিজে রাখার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার।
সব রোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। তাই নিজের এবং পরিবারের প্রতি যত্নশীল হই। আতঙ্ক নয়, ঈদ সবার জন্য বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ।